সোহেল হোসেন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর জেলাতে উৎপাদিত সুপারি ক্রয়-বিক্রয়ে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। মেঘনা উপকূলীয় এই জনপদে এবার হাজার কোটি টাকা লেনদেনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। মানুষও সুপারি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তবে সুপারি বাগানগুলো অপরিকল্পিত ও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগিয়ে সুপারি বাগান করলে আরও কয়েকগুণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

রায়পুর ও মান্দারীর একাধিক ব্যবসায়ী জানায়, এবার প্রতিটি সুপারি দেড় থেকে ২ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। প্রতি পোন (৮০টি) সুপারি ১৫০-১৯০ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হয়। প্রতি কাউন (১৬ পোন) ২৬০০-২৮০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এবার সুপারি উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেশি। তবে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় এই বছর সুপারির আকার অনেকটা ছোট। বেশি দামে কিনলেও পরে বিক্রি করতে গেলে দাম কমে যাওয়ার শঙ্কা করছেন তারা।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জ উপজেলা ও রায়পুর উপজেলার ও সদর উপজেলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লা সুপারি কেনাবেচা হয়। মৌসুমের এই সময়ে অস্থায়ী সাপ্তাহিক হাট-বাজারগুলো পুরোদমে জমজমাট থাকে। রায়পুর উপজেলাতে হায়দরগঞ্জ, খাসেরহাট, মোল্লারহাট, মিতালীবাজার, আলিয়া মাদরাসা মাঠ, রামগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ, পানপাড়া, কাঞ্চনপুর, দল্টা, সদর উপজেলার দালালবাজার, রসুলগঞ্জ, চন্দ্রগঞ্জ, ভবানীগঞ্জ মান্দারি, কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট, রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডারের সবচেয়ে বড় অস্থায়ী সুপারির বাজার বসে। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা লক্ষ্মীপুরে এসে সুপারি কিনে নানাপ্রান্তে নিয়ে যান। সেখান থেকে আবার বিদেশও পাঠাচ্ছেন আড়তদাররা। সাধারণত সুপারি কাঁচা, ভেজা ও শুকিয়ে বিক্রি করা হয়।

রায়পুর পৌরসভার দক্ষিণ দেনায়েতপুর এলাকার আবদুল লতিফ বলেন, বাপ-দাদারা বাগান রেখে গেছেন। এর নারিকেল-সুপারি বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। সুপারির ওপর অনেক মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে।

জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, মেঘনা উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরে সাত হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। বর্তমান বাজারমূল্যে এবার সুপারি থেকে হাজার কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। গেল বছর প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা আয় করেছে লক্ষ্মীপুর জেলাতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন বলেন, সুপারি কেন্দ্রিক লক্ষ্মীপুরে বিশাল অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ রয়েছে। চলতি মৌসুমে সুপারির দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি সুপারি ২ টাকা পর্যন্ত দিয়ে ব্যবসায়ীরা কিনছেন